ঈদুল আজহার ছুটিতে যখন ঢাকার সড়ক, মহল্লা ও জনপদ ফাঁকা হয়ে পড়েছে, ঠিক তখনই রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীজুড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকছেন। পাশাপাশি মাঠে রয়েছে র্যাব, সেনাবাহিনী, আনসার সদস্যসহ ৭৫০টির বেশি টহল দল ও শতাধিক চেকপোস্ট।
নানা অপরাধ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নজরদারি। ঈদ ঘিরে কোরবানির হাট, শপিংমল, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনগুলোতে তৎপর রয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। ছিনতাই, মলম পার্টি ও জাল নোটের কারবার ঠেকাতে র্যাব ও পুলিশ কড়া নজরদারির কথা জানিয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিদিন রাজধানীতে ৭০০ সদস্য সাদা পোশাকে ও পোশাকে কাজ করছেন। আরও বেশি এলাকায় নিয়মিত টহল চলছে, পাশাপাশি জটিল পয়েন্টগুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।’
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে ঈদের জামাত, পশুর হাট এবং পরিবহন টার্মিনালকে ঘিরে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চুরি ও ছিনতাই ঠেকাতে নেয়া হয়েছে বাড়তি পদক্ষেপ।
ডিএমপির মিডিয়া শাখার উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীর প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে আমরা আগেভাগেই পরিকল্পনা সাজিয়েছি। আশা করছি, ঈদুল আজহাও আগের মতোই শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপিত হবে।’
অন্যদিকে সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে সার্বক্ষণিক টহলে। একইসঙ্গে, ট্রেন ও লঞ্চ স্টেশনে মোতায়েন রয়েছে এক হাজারের বেশি আনসার সদস্য।
ঢাকা ছেড়ে বহু মানুষ গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় শহর এখন অনেকটা শুনশান। আর সেই সুযোগে ছিনতাই ও খুনের মতো অপরাধ বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। তারা রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষের দৃঢ় পদক্ষেপ কামনা করছে।
এই প্রসঙ্গে অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘অপরাধ ঘটার পর প্রতিক্রিয়া দেখানো যথেষ্ট নয়, বরং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আগেভাগেই নিতে হবে। যদি পরিকল্পিতভাবে আগেই সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া যায়, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। না হলে অপরাধীরা সুযোগ নেবে, সাধারণ মানুষ পড়বে আতঙ্কে।’
বিশ্লেষকদের মতে, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে পড়া রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা আর সক্রিয়তা বজায় রাখতে হবে।
এস এইচ/
Discussion about this post