কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের শিকার সেই ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা ৫ দিনেও হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার পর শুক্রবার মুরাদনগর থানায় মামলা করেন তিনি। পরে পুলিশ ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ভুক্তভোগী মত বদলানোয় তার পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান।
ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় জানান, আটক ফজর আলীকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তাতে তিনি মারা যেতে পারেন বলে ওই নারী ও তার পরিবারকে ভয় দেখানো হয়। এরপর তিনি ডাক্তারি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন এবং এখন মামলা নিয়েও অনীহার কথা বলেন।
তবে পুলিশ চাইলে ভুক্তভোগী নারী ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে চান বলেও জানান তার আত্মীয়।
জানা যায়, নিপীড়নের দৃশ্য ধারণের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনকে খুঁজছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিপীড়নের পর ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তারদের মোবাইল ফোন পাঠানো হচ্ছে ফরেনসিক পরীক্ষায়। তবে প্রথমে কার আইডি থেকে এটি ছড়ানো হয়েছে সেটি সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি।
যদিও আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট শিল্পী সাহা বলছেন, ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়ে ঘটনার পরদিনই পরীক্ষা করানোর দরকার ছিল। এখন দেরিতে হলেও ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাসহ তার বস্ত্রের ডিএনএ নমুনা দেওয়া জরুরি। না হলে মামলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্রটি থেকে যাবে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমীন সুলতানা বলেন, আইনেই বলা আছে ভিকটিম নারী যদি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে না চান তাহলে তা করা যাবে না। এখানে জোর করে ডাক্তারি পরীক্ষা আইনের বিধানে নেই।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে চেষ্টা করেছি। তবে তিনি রাজি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ওই নারীকে ট্রমা কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত আনতে সবার সহযোগিতা জরুরি। নির্যাতন ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি।
এস এইচ/
Discussion about this post