মানবপাচারের অভিযোগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন ব্যুরোর কর্মকর্তারা ওই দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন।
ব্যাংকক-ভিত্তিক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম খাওসোদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি পাচারকারী চক্রটিকে গ্রেপ্তারে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন ব্যুরো। ‘‘আশরাফ গ্যাং’’ নামে পরিচিত অবৈধ অভিবাসী পাচারকারী চক্রটিকে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়েছে থাইল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
খাওসোদ বলছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা অভিযানে মানবপাচারকারী চক্রটির বাংলাদেশি দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন আশরাফ (৪৬) এবং আবু (৪৭)। এই চক্রের মূলহোতা আশরাফ। আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার আড়ালে তিনি মানবপাচার করতেন।
থাইল্যান্ড ইমিগ্রেশন ব্যুরোর অপরাধ তদন্ত বিভাগের ডেপুটি কমান্ডার কর্নেল পানুপাকায়া জিত্প্রায়ুরাথি বলেন, গত বছরের জানুয়ারি এবং মার্চ মাসে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তারা সোংখলা, পাত্তানি এবং নারাথিওয়াত প্রদেশে ৪১ বাংলাদেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে। অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে প্রবেশের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার দীর্ঘ তদন্তে চক্রটির সদস্যদের শনাক্ত করে ইমিগ্রেশন বিভাগ। গত বছরের জানুয়ারি এবং মার্চ মাসে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তারা সোংখলা, পাত্তানি এবং নারাথিওয়াত প্রদেশে ৪১ বাংলাদেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে
খাওসোদ বলছে, ওই সময় অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে প্রবেশকারী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর চক্রটির অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ৮ জন থাই নাগরিক, একজন বাংলাদেশি এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক।
মামলার তদন্তে দেখা যায়, ওই অভিবাসীরা সা কাইও প্রদেশে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করেছিলেন। পরে তারা একটি বাসে করে ব্যাংককে চলে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর আশরাফের সহযোগী আবুর কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। এরপর সেখান থেকে তাদের থাইল্যান্ডের নারাথিওয়াত প্রদেশের একটি সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে অবৈধপথে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করেন আবু।
খাওসোদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আশরাফ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি একটি আমদানি-রপ্তানি কোম্পানির মালিক। আশরাফের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে এসব তথ্য পান থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশি এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছেন তারা।
কর্নেল পানুপাকায়া জিত্প্রায়ুরাথি বলেন, বাংলাদেশ এবং কম্বোডিয়ার এজেন্টদের সহায়তায় অভিবাসীদের অবৈধপথে থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন আশরাফ। থাইল্যান্ডে অবৈধপথে মানবপাচারের এই চক্রটি কয়েক বছরে ১১৭ মিলিয়ন থাই বাথ হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: খাওসোদ
এ এস/
Discussion about this post