এক্সিডেন্টের পর রক্তাক্ত অবস্থায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ট্রাকের ভিতরেই চাপা পড়ে আর্তনাদ করছেন চালক। মুখে তার কষ্ট আর যন্ত্রণার ছাপ স্পষ্ট, তবুও নিজের প্রাণের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন সহকর্মীকে। বারবার বলছেন “আমি মরে গেলে দুঃখ নাই, আল্লাহর ওয়াস্তে আগে আমার হেল্পারকে বাঁচান ভাই।” সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এমন একটি ভিডিওটি। যা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের জন্য আবেগঘন এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের জন্ম দিয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাকের একপাশে রক্তাক্ত অবস্থায় চাপা পড়েছেন চালক। তাকে ঘিরে জড়ো হয়েছেন স্থানীয়রা। কেউ পানি দিতে চাইছেন, কেউ ফোন করছেন অ্যাম্বুলেন্সে। এর মধ্যেই চালকের কণ্ঠে উঠে আসে ব্যথাভরা মানবিক আকুতি। “ভাই, আমার হেল্পারকে আগে দেখেন। ও তো নড়ছে না আমি থাকি না থাকি, ওরে বাঁচান প্লিজ” “আমি মরে গেলে দুঃখ নাই, আল্লাহর ওয়াস্তে আগে আমার হেল্পারকে বাঁচান।”
ভাইরাল ভিডিওটির প্রসঙ্গে জানা যায়, এটি ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার ঘটনা। এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য ধরা পড়ে এক পথচারীদের মোবাইল ক্যামেরায়, যা এখন ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে। দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। চালক ও হেল্পার উভয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। দুর্ঘটনার পর চালক জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রথমেই অনুরোধ করেন যেন তার সহকারীকে উদ্ধার করা হয়।
ভিডিওটি দেখে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়েছেন, কেউ কেউ মন্তব্য করছেন ”এটাই প্রকৃত সহমর্মিতা, মানবতা এখনো মরে যায়নি।” আবার কেউ বলছেন, ‘পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে এটাই তার প্রমাণ, মৃতু মুখে দাঁড়িয়েও নিজের বাঁচার কথা না ভেবে অন্যের কথা ভাবছেন।’
প্রতিদিন আমাদের আশেপাশে অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু এমন মানবিক দৃশ্য কমই দেখা যায়। “আমি মরলেও দুঃখ নেই, আগে আমার হেল্পারকে বাঁচান” এই একটিমাত্র বাক্যই প্রমাণ করে, আমাদের সমাজে এখনো এমন হৃদয়বান মানুষ আছেন, যাঁরা দায়িত্ব আর ভালোবাসাকে জীবনের চেয়ে বড় করে দেখেন।
সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব
এম এইচ/
Discussion about this post