কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা শাখা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটিতে পদ পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আলী নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। তাকে যুগ্ম সমন্বয়কারী পদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কুমারখালী পৌর শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
শনিবার (২১ জুন) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি অনুমোদন করা হয়।
জানা গেছে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আলী কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের এলোঙ্গি গ্রামের আবদুর সামাদ পাখির ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্যসচিব পদেও ছিলেন। পদ পাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য, শেল্টার বাণিজ্য, ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া তার বাবা পাখির বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। বাবা-ছেলের নানা অপকর্ম ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু করেন স্থানীয়রা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশের পর বাদ পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা কমিটি থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুমারখালীর স্থানীয়রা বলেন, আসাদুজ্জামান আলী কুমারখালী পৌর শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলে দলীয় ক্ষমতার প্রয়োগ দেখাতেন। আলী একজন সুবিধাবাদী মানুষ। নিজের স্বার্থের জন্য তিনি বারবার দল পাল্টান। আগে ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা, তারপর বৈষম্যবিরোধী নেতা হন। নানা অপকর্মের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দল থেকে তাকে বহিষ্কার করে। পুনরায় লিংক-লবিং করে এনসিপির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন সুবিধাবাদী এই আলী।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান বলেন, গত ২১ জুন কুষ্টিয়ার চারটি উপজেলা শাখার সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেয় এনসিপি। এর মধ্যে কুমারখালীর কমিটিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলী পদ পেয়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া এবং জনসাধারণের অনাস্থার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসাদুজ্জামান আলী খান বলেন, আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি। মৃত্যুর ভয় না করে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে রাজপথে ছিলাম ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। স্বৈরাচার সরকার পতনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে আমার। আমি আগে ছাত্রলীগ করতাম, এখন এনসিপি করি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরুর আগে আমি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। আমি এখন উপজেলা এনসিপি কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী৷
তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের লোকজন আগে থেকেই ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমি ও আমার বাবা কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত না। আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পূর্বে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটিয়েছে। আমি কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত না।
এস এইচ/
Discussion about this post