ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার পর পরীক্ষায় ধরা পড়ে তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে। দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। সাতপাঁচ না ভেবে ছেলেকে নিজের একটি কিডনি দিয়ে দেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার এক মা। তবে ১০ মাস সুস্থ থাকার পর আজ শনিবার সকালে ছেলেটি মারা যায়। নিজের কিডনি দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে না পেরে এখন ওই মায়ের কান্না যেন থামছেই না।
সন্তানের প্রতি স্বার্থহীন ভালোবাসা দেখানো ওই মায়ের নাম লাইলি বেগম। সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদরবেশ আদর্শ গ্রামে তার বাড়ি। একমাত্র ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী ইমনকে বাঁচাতে তিনি তার একটি কিডনি দিয়েছিলেন।
ইমনের স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর দক্ষিণ চরদরবেশ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন ইমন। ওই বছর জানুয়ারিতে অসুস্থতা অনুভব করেন ইমন। সোনাগাজী ও ফেনীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় রাজধানীর শ্যামলীর সিকেডি হাসপাতালে।
সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, বিকল হওয়া দুটি কিডনির মধ্যে একটি কিডনি দ্রুত প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ কথা শুনে মা লাইলি বেগম ছেলেকে বাঁচাতে একটি কিডনি দিয়ে দেন। কিডনি প্রতিস্থাপনের পর ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
স্বজনেরা জানান, কিডনি প্রতিস্থাপনের ১০ মাসের মাথায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন ইমন। এরপর তাকে দ্রুত রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিলে গতকাল শুক্রবার রাতে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে পরিবার। এরপর আজ শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।
ইমনের চাচা স্থানীয় মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবু তৈয়ব বলেন, ‘ইমন খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা নিতে গিয়ে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তার চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে গিয়ে আমাদের পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। কিডনি প্রতিস্থাপন শেষে বাড়িতে এসে ইমন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছিল। হঠাৎ আবার অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়।’
সূত্র: দেশ রূপান্তর
এস এইচ/
Discussion about this post