সংস্কারকাজে সাহায্য করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ‘যা-ই ঘটুক না কেন’ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের আশ্বাস দেন তিনি।সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকায় নিজ কার্যালয়ে রয়টার্সকে এ সাক্ষাৎকার দেন সেনাপ্রধান। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন আছে এবং সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্তি দেওয়া তার লক্ষ্য।সেনাপ্রধান বলেন, আমি তার (ড. ইউনূস) পাশে দাঁড়াব, যা-ই ঘটুক না কেন, যাতে তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন।রয়টার্সের ওই সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. ইউনূস ১৭০ মিলিয়ন মানুষের দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করতে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির কয়েক সপ্তাহ আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করা ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য বছর দেড়েক সময় লাগতে পারে। তবে তিনি এ সময় জনগণের ধৈর্য ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব। আমাদের ব্যর্থতার কোনো কারণ নেই।’ওয়াকার-উজ-জামান রয়টার্সকে বলেন, আমি এমন কিছু করব না, যা আমার সংস্থার জন্য ক্ষতিকর হবে। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।
হাসিনার বিদায়ের পর সরকারের ব্যাপক সংস্কারের প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীতেও অন্যায়কারী সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জেনারেল ওয়াকার বলেন, অনেক সেনা সদস্যকে ইতোমধ্যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে সাক্ষাৎকারে শাস্তির ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
জেনারেল ওয়াকার সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে বলেন, ‘এমনটা কেবল তখনই ঘটতে পারে, যখন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য থাকে, যেখানে সেনাবাহিনী সরাসরি থাকবে প্রেসিডেন্টের অধীনে।’বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে। এটি কার্যত প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণেই থাকে।জেনারেল ওয়াকার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলমান সাংবিধানিক সংস্কারে এ ব্যাপারে কিছু সংশোধন ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনী রাজনেতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়। কোনো সেনাসদস্য কোনোভাবেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবে না।’
এস এম/
Discussion about this post