সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন লোডশেডিং নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় দৈনিক ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় কয়েক বছর ধরেই এর ধকল সইতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এদিকে, লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চুনারুঘাট নামে একটি পেজে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নানা পোস্ট দেয়া হয়।
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনের দৃষ্টি গোচর হলে আমেরিকা থেকে এক ভিডিও বার্তা দেন তিনি। ভিডিও বার্তায় বলেন, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। আর আমরা হবিগঞ্জের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এ সময় বিষয়টি দ্রুত সুরাহা না হলে তিনিসহ হবিগঞ্জের তিন সংসদ সদস্যকে নিয়ে মহাসমাবেশের ডাক দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ব্যারিস্টার সুমন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলায় ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭ মেগাওয়াট। এ অবস্থায় উপজেলায় দৈনিক ১৮ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও তা আসার-যাওয়ার মধ্যেই থাকছে। এতে প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ হাসপাতাল ও স্কুলগুলোতে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুনারুঘাট কার্যালয় সূত্র জানায়, চুনারুঘাট উপজেলার দেওরগাছ ও রাজার বাজার সাবস্টেশনের মাধ্যমে উপজেলার প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হয়। আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও কৃষি গ্রাহকের জন্য দৈনিক বিদ্যুৎ প্রয়োজন ১৫ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। অথচ দুটি সাবস্টেশন দৈনিক পাচ্ছে মাত্র ৭ থেকে ৮ মেগাওয়াট। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ পড়েছে চরম সংকটে। তারা আবাসিকে বিদ্যুৎ দেবে নাকি উপজেলার চা শিল্প টিকিয়ে রাখতে শিল্পখাতে বিদ্যুৎ দেবে।
এছাড়া বাণিজ্যিক ও কৃষি বিভাগ তো রয়েছেই। তাই বাধ্য হয়েই তারা ৬টি ফিডার কাটছাট করে বিদ্যুৎ চালু রাখছে উপজেলায়। এতে চা বাগান দৈনিক ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা, উপজেলা সদর দৈনিক ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা এবং গ্রামগুলোতে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে উপজেলায় গ্রামাঞ্চলে ১৮ ঘণ্টা এবং শহরে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
চুনারুঘাটের ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। অথচ চুনারুঘাটে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ভয়ংকর। ফলে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হয়। এতে অতিরিক্ত ব্যয় গুনতে হচ্ছে।
চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে শিশুসন্তানকে নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তীব্র গরমে চার্জের ফ্যান কিনেও শান্তি পাচ্ছি না।
চুনারুঘাট পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জুনায়দুর রহমান জানান, ১৬ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে মাত্র ৭ থেকে সাড়ে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছি। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের ৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে বার বার ফিডারগুলো কেটে কেটে।
টিবি
Discussion about this post