আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল। রোববার ও (৫ মে) সরকারি এক বিবৃতিতে ইসরায়েলে আল জাজিরা বন্ধে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সর্বসম্মতির এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকালীন আল জাজিরাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করে ইসরায়েলে কাতারি এই সম্প্রচারমাধ্যমের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার অনুমতি দিয়ে সম্প্রতি ইসরায়েলের সংসদে একটি আইন পাস করা হয়। আইনটি পাসের পর রোববার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্য ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন।
মন্ত্রিসভার ভোটাভুটির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নেতানিয়াহু বলেন, ‘‘ইসরায়েলে উসকানিমূলক চ্যানেল আল জাজিরা বন্ধ করা হবে।’’ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রী আইনটি কার্যকর করার আদেশে তাৎক্ষণিকভাবে স্বাক্ষর করেছেন।
তবে দেশটির একজন আইনপ্রণেতা চ্যানেলটির কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। যে কারণে আল জাজিরা কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করতে পারবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের মধ্যে ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যালয় বন্ধ, সম্প্রচার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত, ক্যাবল ও স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলো থেকে চ্যানেলটি বিচ্ছিন্ন এবং এর ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়ার কাজও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
কাতার সরকারের অর্থায়নে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। গত ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আসছে আল জাজিরা। যে কারণে ইসরায়েলের সরকার এর আগেও আল-জাজিরার কার্যক্রম বন্ধের উদ্যোগ নেয়।
গত মাসে ইসরায়েলের সংসদে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত বিদেশি এই সম্প্রচার মাধ্যমকে ইসরায়েলে সাময়িকভাবে বন্ধ করার অনুমতি দিয়ে একটি আইন পাস করা হয়।
তবে ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে রোববার আল জাজিরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স। যদিও ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে যে অভিযোগ আল জাজিরার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে তা অতীতে প্রত্যাখ্যান করেছে কাতারি এই সম্প্রচারমাধ্যম। তারা বলেছে, ইসরায়েলে কার্যক্রম বন্ধের উদ্যোগ আল জাজিরাকে নীরব করে দেওয়ার একটি চেষ্টা।
আইনটি পাসের পর মন্ত্রিসভার সর্বসম্মতি পাওয়ায় আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধে করে দেওয়ার সময় পাবে নেতানিয়াহুর সরকার। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনুমতিতে এই সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে।
এ এস/
Discussion about this post