স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের তৈরি তালিকা দেখে সাধারণ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে ধরে নিয়ে জঙ্গি তৎপরতার মামলা ও হত্যা করা হতো। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হত্যা ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে বিভিন্ন পেশাজীবী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী সরকারের আমলে গুম হওয়া ভুক্তভোগী শাহ আলাউদ্দিন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ হিল কাফি, নজরুল ইসলাম, মোহন, অপারেশন ঈগলহান্টে নিহত মসলা বিক্রেতা আবুল কালাম আবু’র স্ত্রী সুমাইয়া বেগম, আবু’র বাবা আফসার আলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, নাপিত, জেলেসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে দিনে ও রাতে আটক করে নিয়ে গিয়ে গুম করতো র্যাব ও ডিবি। এরপর জিহাদী বই, অস্ত্র ও গানপাউডার সামনে দিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ছবি তুলে জঙ্গি তৎপরতার মামলা দিতো। পরিবারের একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্যান্য সদস্যদেরকেও ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিতো তারা। এমনকি এসব ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে তুলে নিয়ে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করে জঙ্গি তৎপরতার মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত সরকারের আমলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম ভুক্তভোগীদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের পর আয়নাঘরে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন এবং একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছেন।
এছাড়াও জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগরে জঙ্গি দমন অপারেশন ‘ঈগলহান্ট’ নাম দিয়ে নিরীহ মসলা বিক্রেতা আবু’র বাড়িতে ৩ দিন ধরে নাটক সাজিয়ে আবুসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যার পর তার স্ত্রী সুমায়া’র পায়ে গুলি করে এবং তার শিশুসহ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। সে সময় থেকে ভুক্তভোগীরা মিথ্যা মামলায় আসামি হয়ে গত ৬ থেকে ৮ বছর ধরে প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দিয়ে আর্থিক এবং মানসিকভাবে হয়রানী হয়ে আসছে।
মানববন্ধনে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও ডিবি এবং পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বক্তারা।
মানববন্ধনে ২০-২৫টি পরিবারের শতাধিক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন ভুক্তভোগীরা।
টিবি
Discussion about this post