ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা ও ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) সাবেক প্রধান ইয়াসির আরাফাতের স্মৃতিবিজড়িত গাজা উপত্যকার বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ওই বাড়িতেই বসবাস করতেন ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরাফাত।
ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তুরস্কের আনাদোলু নিউজ এজেন্সি ও ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে।
বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আতিফ আবু সাঈফ বলেন, ইসরাইলি অব্যাহত আগ্রাসন ও ধ্বংসযজ্ঞের অংশ হিসেবে দখলদার সেনারা পিএলও’র প্রতিষ্ঠাতা প্রধান ইয়াসির আরাফাতের বাড়ি ধ্বংস করেছে।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের মর্যাদা এবং সংগ্রামের প্রতীক মুছে ফেলার লক্ষ্যে বাড়িটি ধ্বংস করেছে ইসরাইল।
এ বাড়িতে আরাফাত ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বসবাস করেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, সেখানে আরাফাতের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জিনিসপত্র রয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সূচনাকালে গাজায় তার উপস্থিতির সময় এই বাড়ি আমাদের জনগণের ইতিহাসে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে আছে।

আবু সাঈফ জোর দিয়ে বলেন, এই ধ্বংসযজ্ঞ দখলদার জায়নবাদী সেনাদের বর্বরতার নতুন প্রমাণ।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা পিএলওর চেয়ারম্যান হিসেবে আরাফাত ইসরাইলি দখলদারির বিরুদ্ধে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। জীবনের একটা দীর্ঘ সময় আরাফাত ধর্মনিরপেক্ষ ফাতাহ দলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৮-১৯৬০ সালের মধ্যে তিনি এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে ইসরাইলের অস্তিত্বের সম্পূর্ণ বিরোধী থাকলেও পরে আরাফাত ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন।
২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সালের শেষভাগ পর্যন্ত আরাফাত ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাতে তার রামাল্লার দপ্তরে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে থাকেন। ২০০৪ এর শেষদিকে আরাফাত অসুস্থ হয়ে পড়েন, এবং কোমায় চলে যান।
আরাফাতের অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি; কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, তিনি ইডিওপ্যাথিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা এবং সিরোসিসে ভুগছিলেন।
২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৭৫ বছর বয়সী ইয়াসির আরাফাত।
ধারণা করা হয়, তাকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করছে ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ।
এ জেড কে/
Discussion about this post