লিবিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর সিদ্দিক আল-কবির ও তার প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তারা সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনীর হামলার ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার আল কবির টেলিফোনে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, মিলিশিয়া বাহিনী অনেক ব্যাংক কর্মীদের ভয়ঙ্করভাবে হুমকি দিতে থাকে এবং কখনও কখনও তাদের বাসায় গিয়ে সন্তান কিংবা আত্মীয়দের অপহরণ করে নিয়ে যায়।
লিবিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটির বিলিয়ন ডলারের তেল ভিত্তিক রাজস্বের পরিচালনা করত। ২০১১ সালে ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা মুয়াম্মার গাদ্দাফি উৎখাত হন। এরপর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। বর্তমানে দেশটির পূর্ব ও পশ্চিমের প্রশাসনের মধ্যেও এই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। তারা একে অপরের বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে।
এই দুই প্রশাসনের মধ্যে গত সোমবার থেকে নতুন দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। ত্রিপলি ভিত্তিক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দেইবাহ, যিনি পশ্চিম লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি সরকারের জন্য কাজ করছেন। গর্ভনর সিদ্দিক আল-কবির পালিয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অফিসে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার এবং বিদ্রোহী দলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলছে। আল কবির অভিযোগ করেন, লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার তেল ভিত্তিক রাজস্বের অপব্যবহার করছেন।
এদিকে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় বেনগাজি ভিত্তিক লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ, সোমবার থেকে তেলক্ষেত্রগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও পূর্বাঞ্চলের সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নয়। তবে এ সরকারের সামরিক নেতা খলিফা হাফতার লিবিয়ার বেশিরভাগ তেলক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ করেন।
ত্রিপলিতে আল জাজিরার সাংবাদিক মানিক তৃনা বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই সম্পূর্ণভাবে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নেয়নি।
ত্রিপলি ভিত্তিক প্রেসিডেন্টশিয়ার কাউন্সিল নতুন পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছেন। তবে দেশটিতে অধিকাংশ ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। ফলে মানুষজন অর্থের লেনদেন করতে পারছেন না।
তৃনা বলেন, সাধারণ মানুষজন বুঝতে পারছেন না কী হয়েছে। তবে নতুন পরিচালনা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দখলে নিয়েছে। সেখানে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল সামনেও অনেক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
তৃনা আরও বলেন, পালিয়ে যাওয়া গর্ভনর তার কর্মীদের ব্যাংক থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নতুন পরিচালনা পর্যন্ত তাদেরকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
সূত্রঃ আল জাজিরা
এ ইউ/
Discussion about this post