বুড়িগঙ্গা নদী। হাজারো স্বপ্ন, দু:খ দুর্দশা মিশে আছে যে নদীতে। একসময় ব্রহ্মপুত্র আর শীতলক্ষ্যার পানি এক স্রোতে মিশে বুড়িগঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। বলা চলে ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদীর সন্তান বুড়িগঙ্গা। ঢাকার বুকে খেয়া পারাপারের কথা চিন্তা করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বুড়িগঙ্গা নদী। নদীর একপাড় সদরঘাট, অন্যপাড়ে কেরানীগঞ্জ। যুগ যুগ ধরে দু’পাড়ের মানুষের মেলবন্ধ তৈরি করেছেন বুড়িগঙ্গার মাঝিরা।
আবহমান যুগ থেকেই ব্যস্ততম এ নদীর দু’পাড়জুড়ে গড়ে উঠেছে কত শত নৌঘাট। আবার কালের বিবর্তনে বিলীনও হয়েছে অনেক ঘাট। বুড়িগঙ্গার দু’পাড়জুড়ে পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে সোয়ারীঘাট পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি নৌঘাট রয়েছে। একেক টি ঘাটে ৫০ থেকে ১০০টি নৌকা থাকে। নিত্যদিন এ ঘাটগুলো ব্যবহার করে দু’পাড়ের হাজারও মানুষ। তথ্য বলছে, এপাড় ওপাড় কোটি কোটি টাকার মালামাল ওঠানামা হয় এই খেয়া ঘাটগুলো দিয়েই।
বুড়িগঙ্গায় নৌকা পারাপার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। লঞ্চের ধাক্কায় প্রায়ই ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা।
সদরঘাট দিয়ে ঢাকা ছাড়েন এবং ঢাকায় আসেন দক্ষিণবঙ্গের মানুষদের একটি বড় অংশ। আশপাশে কেবল নৌকা চলাচলের জন্য রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘাট। এসব ঘাট থেকে নৌকার মাধ্যমে নদী পারাপার হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ। এর মধ্যে নৌ বন্দরের বুক চিড়ে যেসব নৌকা অপর পারে যায়, ঝুঁকিতে বেশি তারাই। সদরঘাট বাবুবাজার মিটফোর্ড ঘাট গড়ে উঠেছিল অনেক আগেই৷ এ ঘাটে বর্তমানে যারা নৌকা চালান তাদের কেউই এ ঘাটের গোড়াপত্তন দেখেননি৷ তবে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য বাবু বাজার থেকে জিনজিরা পর্যন্ত গড়ে তোলা হয়েছে একটি সেতু, নাম বাবুবাজার ব্রিজ। তবু বন্ধ হয়নি নৌকা পারাপার।
প্রবীণ এক মাঝির সাথে কথা হলে জানান, এক যুগের বেশি সময় ধরে যাত্রী পারাপর করছেন তিনি। ষাটোর্ধ্ব এই মাঝিও বৈইঠা বইছেন প্রায় ত্রিশ বছর ধরে।
নোংরা-আবর্জনা, সাথে কলকারখানা নির্গত কেমিকেল। এতেই সারা বছর দুর্গন্ধ থাকে বুড়ি গঙ্গার পানি। তবে, এক সময় স্বচ্ছ ছিলো এই ঢাকার বুড়ি গঙ্গা।
কালো পানি, আর দুর্গন্ধযুক্ত পানিতেই যাদের জীবিকা, তারা চাইলেও এ পেশা থেকে ফেরার সুযোগ নেই। তাইতো যতদিন বেঁচে আছেন, থাকবেন এ পেশার সাথেই।
টিবি
Discussion about this post