বাংলাদেশে ও এর আশপাশের অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। তবে সম্প্রতি দেশে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় বিষয়টি মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নড়েচড়ে বসেছে। বিশেষ করে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলো তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে গেল ১৫ বছরে অন্তত ১৪১ বার হালকা ও মাঝারি ভূমিকম্প হয়েছে। আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোথায় কোথায় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা জানা সম্ভব হলেও কখন সেটি ঘটতে পারে তা বলা কঠিন।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ভূমিকম্প থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কী করা উচিত? ভূমিকম্পের সময় জানালা কিংবা ভবনের সামনের অংশে অবস্থান করবেন না। কারণ এগুলো প্রথমেই ধসে পড়ে। বেশিরভাগ সময় বিল্ডিং এক দিকে কাত হয়ে যায়।
যদি কেউ বাইরে থাকে তাহলে বিল্ডিং, বৈদ্যুতিক তার, ম্যান-হোল, জ্বালানি কিংবা গ্যাসের লাইন থেকে দূরে অবস্থান করতে হবে। কারণ ভূমিকম্পের হলে গাছ, টেলিফোনের খুঁটি, বিল্ডিং ইত্যাদি উপড়ে পড়ে যেতে পারে।
তবে ভূমিকম্পের সময় কেউ যদি বিল্ডিংয়ের ভেতর অবস্থান করে তাহলে, যেখানে আছে সেখানেই থাকা ভালো। এসময় দৌড়ে বাইরে যাওয়ার কিংবা অন্য ঘরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করা ঠিক নয় বলেও মনে করেন বিষেশজ্ঞরা।
তারা পরামর্শ দেন বিল্ডিংয়ের ভেতর অবস্থান করলে হাঁটু গেড়ে বসে পড়তে হবে। কাছাকাছি কোন টেবিল বা ডেস্ক থাকলে তার নীচে ঢুকে পড়তে পারেন। ঝাঁকুনি একেবারে থেমে যাওয়ার পর সাধারণত খোলা জায়গায় বের হওয়া নিরাপদ। কারণ যে কোন সময় বিল্ডিং ধসে পড়তে পারে।
আর্থকোয়েক কান্ট্রি অ্যালায়েন্স সংস্থার মতে, টেলিভিশন, বাতি, কাঁচ এবং বইয়ের আলমারি পড়ে গিয়ে বা উড়ন্ত বস্তুর কারণে বেশিরভাগ আঘাত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে। আরেকটি সম্ভাব্য ঝুঁকি হল ভূমিকম্পের পর ফেটে যাওয়া পাইপ থেকে গ্যাস বের হওয়া।
বাংলাদেশ ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর নিচে যে পরিমাণ শক্তি জমা হয়ে আছে তা বের হলে বেশ বড় ধরণের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ায় এটিকে দুই ভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে- এটা বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্ব লক্ষণ।
Discussion about this post