উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে, তাদের কোনো না কোনোভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোমবার (৬ মে) বিকেলে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। শাস্তির বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৩ জন এমপি বাদ পড়েছেন- এটা কি শাস্তি নয়! মন্ত্রিপরিষদে ২৫ জন নেই। সময় মতো শাস্তি হওয়ার এটাও একটা উদাহরণ।
উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেনি- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নিবৃত্ত করার জন্য দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তাদের আরও উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির আগ্রহ কোনো দিনই ছিল না। দলটি ‘৭৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। মাগুরা মার্কা, অর্থাৎ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার, হা বা না ভোটে ১১৪ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি- এসবই বিএনপির সৃষ্টি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রকে শিকলমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে তিনি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। আলাদা তাদের আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ, ফিন্যান্সিয়াল পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ওই নির্বাচন কমিশনকে পার্লামেন্টে আইন করে স্বাধীন সত্তা করে দিয়েছেন। এরপরেও ৮৬টার মতো সংশোধনী আনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি এখনো বলছি, উই আর নট পারফেক্ট। বিশ্বে একটা দেশ দেখান যে দেশের গণতন্ত্র পারফেক্ট। নির্বাচন পুরোপুরি পারফেক্ট, এটা কেউ দাবি করতে পারবে না। আমরাও পারফেক্ট, এটা দাবি করি না। গণতন্ত্রকে ম্যাচুরিটি দেওয়ার জন্য আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।’
দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী উদযাপন করা হবে। ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সারা দেশের থানা উপজেলা ছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়েও এ কর্মসূচি পালন করা হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা হবে এদিন বিকেলে। এতে নেত্রী, নেতারা, বুদ্ধিজীবী, সমমনষ্ক ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানাবো। মসজিদ মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সবুজ ধরিত্রী’ কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হবে। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় আলোকসজ্জা বাদ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংকটের প্রেক্ষিতে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আনন্দ র্যালি করবে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন। ১১ মে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন আরও বিস্তারিত বলা যাবে।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর আগে আমাদের সব অনুষ্ঠানেই বিএনপিকে দাওয়াত দিয়েছি, এবারও বিএনপিকে দাওয়াত দেওয়া হবে। অন্য রাজনৈতিক দলও পাবে।
এ এস/
Discussion about this post