কুয়েতের শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসাপ্রক্রিয়ায় কাজ করছে দেশটির ঢাকার দূতাবাসের তালিকাভুক্ত তিন রিক্রুটিং এজেন্সি। তারা এই কাজে কারসাজি করে নির্ধারিত ফির চেয়ে অনেক বেশি অর্থ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২২ অক্টোবর কুয়েতে বসবাসরত কর্মীদের পক্ষ থেকে ঢাকায় কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আলী আহমেদ ইব্রাহিম আল দুফাইরি বরাবর এসব অভিযোগসংবলিত একটি চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে ওই দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীরা উল্লেখ করেন, ভিসার ক্ষেত্রে প্রত্যেক কর্মীর জন্য নির্ধারিত ফি ছয় হাজার টাকা। এই তিন এজেন্সি প্রতি কর্মীর জন্য নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত ৩০০ ডলার নিচ্ছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
এই এজেন্সি তিনটি হলো এসবি ইন্টারন্যাশনাল (আরএল ৭৬), টাইমস এন্টারপ্রাইজ (আরএল ৩৮৫) ও চট্টগ্রাম ট্রাভেলস (আরএল ৮০৫)।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য মতে, কুয়েতে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৫০ হাজার লোক পাঠানো হয়। গত বছর গেছে ৩৪ হাজার ৪৮৯ জন কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুয়েত শ্রমবাজারের ভিসা উন্মুক্ত নয়। কুয়েত থেকে কোনো গ্রুপ ভিসা ইস্যু করা হয় না। শুধু কোম্পানির প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মী ভিসা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশি কর্মীদের অভিযোগ, একতরফা ভিসার কাজ পাওয়ায় এই তিন এজেন্সি যে ফি দাবি করছে, সেটাই দিতে হচ্ছে অন্যান্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে, যা কুয়েত গমনেচ্ছুদের কাছ থেকেই নেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগে দেখা যায়, ওই তিন এজেন্সি ভিসার জন্য নির্ধারিত ফির ছয় হাজার টাকা ছাড়াও অতিরিক্ত ৩০০ মার্কিন ডলার আদায় করছে। চিঠিতে বলা হয়, ভিসা কনসুলার বিভাগটি তাদের পছন্দের তিনটি এজেন্সিকে বেছে নিয়েছে।
এসব এজেন্সি কারসাজির মাধ্যমে কুয়েত দূতাবাসের বৈধ ভিসা ফির বাইরে অতিরিক্ত ৩০০ ডলার আদায় করছে। তবে তারা এই অতিরিক্ত ফির রসিদ দিচ্ছে না। এই অতিরিক্ত অর্থ গোপন করে সুবিধাভোগীরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর কাছ থেকে অবৈধভাবে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে, যার পরিমাণ এক কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
এ প্রসঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রার সভাপতি আবুল বাশার জানান, কুয়েতে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের মতো অল্প কিছু এজেন্সি ভিসা নিয়ে কাজ করতে পারে। এ বিষয়ে দূতাবাসের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছি। একটা আবেদনও জমা দিয়েছি যে সবাইকে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হোক। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
এফএস/
Discussion about this post